মানসিক হাসপাতালের অমানবিক চিকিৎসা দূর হউক
শিরোনাম দেখে অনেক মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা হয়তো রেগে যাবেন। কিন্তু আমি ওনাদের রাগ থামানোর পক্ষে কয়েকটি যুক্তি দেখাচ্ছি।প্রথম অভিযোগ হচ্ছে বদ্ধ জেলখানার মত মানসিক হাসপাতালের কাঠামো । কে বলবে মানসিক রোগীদের জন্য বদ্ধ জেলখানার মতো হাসপাতালের পরিবেশ ভালো? তাদের জন্য খোলামেলা বিনোদনমূলক পরিবেশ দরকার।মনোচিকিৎকরা কিভাবে রোগীদের জন্য এ ধরণের হাসপাতাল সমর্থন করে? আসলে রোগীদের জন্য ওনাদের কোন দয়ামায়া নেই। ওনাদের চিকিৎসা করা দরকার চিকিৎসা করে। রোগীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবে না। বয়স্ক রোগীদের বেলায় এরকম করলে মানায়। কিন্তু তরুণ রোগীদের বেলায় কি এরকম মানায়? তাদের জীবন পড়ে আছে সামনে। তরুণ রোগীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে যদি চিকিৎসকরা ভাবতো ওনারা তরুণ রোগীদেরকে বদ্ধ হাসপাতালে রাখতো না।শুধু তাই নয়, ওনারা রোগীদেরকে হাসপাতালে ভর্তি রাখে অভিভাবক ছাড়া। অভিভাবক থেকে রোগীদেরকে দূরে রাখা নাকি মানসিক চিকিৎসার অংশ।আমার মতে এটা একটা ভুল চিকিৎসা পদ্ধতি।
অভিভাবক ছাড়া চিকিৎসার পরিণাম যদি ভালো হতো তাহলে এই চিকিৎসা গ্রহনযোগ্য হতো।এই ধরণের চিকিৎসার পর রোগীকে যখন বাসায় আনা হয় তখন অনেক অভিভাবক রোগীর অবনতির কথাই বলেন। রোগীর চালচলন, কথাবার্তায় প্রানহীন, এলোমেলো ভাব লক্ষ্য করা যায়।শুধু রোগীর রাগ বা উত্তেজনা সাময়িকভাবে কম দেখা যায়।রাগ তো কিছুটা কম থাকবেই কারণ ওষুধ খাওয়াইয়ে রোগীকে নির্জীব করে রাখা হয়।তরুণ,মেধাবী শিক্ষার্থী মানসিক রোগীদের যদি এরকম নির্জীব করা হয় এটা কি গ্রহণযোগ্য চিকিৎসা হতে পারে?এরকম প্রমাণও পাওয়া গেছে হাসপাতালে ভর্তি করার আগে রোগী যতটুকু পড়াশুনা করতে পেরেছে হাসপাতালে ভর্তি থেকে বাসায় আসার পর ততটুকু পড়াশুনা করার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেছে।মানসিক রোগীদের ভুল চিকিৎসা চলছে।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় তরুণ রোগীদের মানসিক রোগ হবার জন্য দায়ী প্রেমজনিত ঘটনা।আমরা সিনেমাতে সারাবছর দেখে এসেছি যে ব্যক্তির কাছ থেকে প্রেমাঘাত পেয়ে রোগী অসুস্থ সেই ব্যক্তিকে সামনে হাজির করার পর রোগী সুস্থ হয়ে যায়। কিন্তু মনোচিকিৎসাবিদরা তা সমর্থন করে না।ওনারা ওষুধের মাধ্যমে মনের চিকিৎসা করার চেষ্টা করেন।কিন্তু চিকিৎসা তো কার্যকরী হচ্ছে না। আর আমি যে বললাম ব্যক্তিকে হাজির করার কথা, তার মানে এই নয় ব্যক্তিটিকে পেতে হবে। শুধুমাত্র রোগীর সাথে কথা বলিয়ে দেয়া যাতে রোগীর মনে স্থিরতা ফিরে আসে।
ওষুধের মাধ্যমে মানসিক রোগীর চিকিৎসা কখনো পরিপূর্ণ চিকিৎসা হতে পারে না। অভিভাবকের সহায়তায় মানসিক হাসপাতালে রোগীদেরকে কর্মব্যস্ত রাখার মাধ্যমে চিকিৎসা করতে পারলেই সেটা হবে চিরতরে মানসিক রোগের নিরাময়যোগ্য চিকিৎসা। মানসিক রোগ মানেই হচ্ছে মনটা স্থির করা। মন ঠিক করার জন্য প্রয়োজন কাজ। কারণ সে তো মানুষ। মানুষ তো কাজ ছাড়া থাকতে পারে না। এখন হাসপাতালগুলিতে কি হচ্ছে? ওষুধ খাইয়ে তরুণ রোগীদেরকে বদ্ধ হাসপাতালে রাখা হয়। এরকম অবস্থায় রোগীদের মানসিক রোগ তিনগুণ বেড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা।
যাই হউক মানসিক হাসপাতাল হওয়া উচিত এমন যেখানে বিভিন্ন কর্মমুখী ও বিনোদনমূলক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্র। অর্থাৎ হাসপাতাল থেকে একজন রোগী যেন দক্ষ কর্মী হয়ে বের হয়। সবকিছু শেখার ব্যবস্থা যেন হাসপাতালে থাকে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন