মনের জোরে জটিল রোগ কিভাবে উধাও হয়ে গেল

  জটিল রোগ তো অনেক আছে।তবে এখানে  মনের জোরে শ্বাসকষ্ট,  গ‍্যাস্ট্রিকজনিত  আলসার দূর করার কথা বলা হয়েছে। আর এক তরুণী রোগী মনের জোর অর্জন করেছে দীর্ঘ চার মাস ভোগার  পর।

 পাঁচ বছর আগে রোগীর একবার আলসার ও শ্বাসকষ্ট হয়েছিল, তখন ডাক্তারী চিকিৎসায় সে সুস্থ  হয়ে গেছে।এখন আবার পাঁচ বছর পর তার সমস‍্যা নতুন করে দেখা দিয়েছে।এই সমস‍্যার পিছনে কি কারণ? শারীরিক নাকি মানসিক? সেটাই এখন দেখার বিষয়।

প্রায় চার মাস যাবৎ  রোগীটি খাওয়ার পর পেট ভারী লাগা, বুকে চাপ ও চরম শ্বাসকষ্টজনিত  সমস‍্যায় ভুগছে।রোগী নিজেও তার অভিভাবকেরা বলছে,  কয়েকদিন বিরামহীনভাবে অতিরিক্ত তেল ও ঝালের খাবার খাওয়ার কারণে তার এই সমস‍্যা হয়েছে। বিকেল হলেই যেন তার সমস‍্যা  আরও বেড়ে যায়। সে আগের ঔষুধ খাওয়া শুরু করে কিন্তু কিছুতেই তার সমস‍্যা কমছে না। সমস‍্যা দূর করার জন‍্য ঝাউ ভাত ও শুধুমাত্র সিদ্ধ সব্জি দিয়ে ভাত খাওয়া শুরু করেছে। খারাপ লাগার ভয়ে সে এগুলো ছাড়া  অন‍্য খাবারও খায় না।এছাড়া বিকেল হলেই তার শ্বাসকষ্ট এতোই বেড়ে যায় যে খাবারও ঠিকমতো খেতে পারে না। খাবার খাওয়ার সময় তার পাশের ঘরে থাকা বান্ধবীদের ডেকে আনে।

তারপর এ ধরণের সমস‍্যা নিয়ে তো আর দেরি করা যায় না।  বিশ হাজার টাকা খরচ করে বিভিন্ন ধরণের রক্ত পরীক্ষা, এক্সরে, এন্ডোস্কপি করা হলো। ধরা পড়লো আবারও  পেটের আলসার। কিন্তু  ডাক্তারের পরমর্শমতো ঔষুধ খাওয়ার পর  রোগীর খারাপ লাগা তিনগুণ বেড়ে গেলো। রোগীকে অন‍্য ডাক্তার দেখানো হলো। অন‍্য ডাক্তারের ঔষুধ খেয়ে  ও রোগীর একই অবস্থা। তারপর রোগী ঔষুধ খাওয়া বন্ধ করে দিল। রোগীকে নিয়ে তো একদম বেহাল অবস্থা।  সবার তো একই চিন্তা, কিভাবে রোগী সুস্থ হবে ঔষুধ না খেয়ে। 

এমন চরমাবস্থায় রোগীর এক বান্ধবী আসলো। বান্ধবী তখন রোগীকে বুঝালো, "তোর মতো আমার ও খারাপ লাগতো। এগুলো কিছু না।  মনের ভিতর আনন্দ রাখ, সব সমস‍্যা দূর হয়ে যাবে। পেট ভারী লাগা, খালি লাগা, শ্বাসকষ্ট লাগা সবই মনের থেকে হয়।তুই তো মানসিক আঘাত পেয়েছিস, সেই আঘাত থেকে তোর খারাপ লাগে।   আঘাতকে পাত্তা দিবি না।"

বান্ধবীর এই কথাগুলো রোগীর  শ্বাসকষ্টসহ আরও অন‍্যান‍্য সমস‍্যা দূর করতে যাদুর মতো কাজ করলো।অর্থাৎ বান্ধবীর কথায় রোগীর মনের জোর এমনভাবেই বেড়ে গেল যে রোগী বান্ধবীর কথায়  ঔষুধ ছাড়া একদিনেই সুস্থ  হয়ে গেলো।

অবশেষে রোগীর সুস্থতা থেকে এটাই  প্রমাণিত হলো, রোগী যে এতোদিন  ভুগেছে, এই ভোগার পিছনে একমাত্র কারণ ছিল মানসিক আঘাত। এই মানসিক আঘাত যতদিন সে মনের ভিতর ধরে রেখেছে ততদিন সে চরম শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন সমস‍্যায় ভুগেছে।  একমাত্র বান্ধবীই পেরেছে মানসিক সমস‍্যা বুঝতে ও দূর করতে।  সুতরাং এটাই বুঝা গেলো , যে কোন জটিল রোগ দূর করতে মনের জোর ও মনের আনন্দ কতটা জরুরী।


মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ