নিজের কথার বিচার করুন, মনকে পরিষ্কার রাখুন

  ভক্তিতে রত্ন মিলে, তর্কে বহুদূর। এই কথাটা বলার কারণ হচ্ছে যখন আমরা নিজেকে  অন‍্যের কাছে শ্রেষ্ঠ বলে দাবি করতে চাই তখনই তর্ক করি। তর্কের মধ‍্যেও ভালো ও খারাপ তর্ক আছে। যারা খারাপ উদ্দেশ‍্যে তর্ক করে তারা ষড়রিপু দিয়ে পূর্ণ। অর্থাৎ যাদের অন্তর  হিংসা, লোভ, নিন্দা, ঘৃণা দিয়ে পূর্ণ।এসব কালো অন্তরের মানুষ দুনিয়ার বাহ‍্যিক সম্পদ দিয়েই মানুষকে মুল‍্যায়ণ করে। এরা ভাবে যার সম্পদ যত বেশি তার তত জ্ঞান বেশি।  

আমি অন্তর পরিষ্কারের কথা বলছিলাম। যারা অন্তর পরিষ্কার  রাখতে চায় তারা নিজেকে অন‍্যের কাছে শ্রেষ্ঠ বলে দাবি করার প্রয়োজন মনে করে না। কারণ মুখের জোড়ে কেউ শ্রেষ্ঠ হতে পারে না। শ্রেষ্ঠ হতে হয় অন্তরের জোড়ে। অন্তরের জোড় বা শক্তি কাদের ভিতর  থাকে, যাদের ভিতরে মানবতা বা মানবিক গুণ আছে। মানবিক গুণ থাকার উপকারীতা হচ্ছে বিধাতার নৈকট‍্য লাভ করা। 

পৃথিবীটা   বা জীবনটা  কয়দিনের? এই অল্প সময়ের মধ‍্যে মানুষের কত দুঃখ কষ্ট থাকে। বিধাতা মানুষকে কষ্ট দেন নিজেকে চিনার জন‍্য।  অথচ কত মানুষ কষ্টের কাছে হার মেনে অসহায় জীবন যাপন করছে। 

মানুষ সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। বিধাতা মানুষের ভিতরে সবকিছু দিয়েই সৃষ্টি করেছেন। তবে মানুষ কেন অসহায় থাকবে। মানবিকতার গুণ অর্জন করে যে কোন মানুষই   উচু স্থানের মানুষ হতে পারে। কেন মানুষ নিজেকে অসহায়, ছোট মনে করবে।

 এখানে বলা হয়েছে প্রতিটি কথার বিচার করতে।  সবাই যদি আমরা নিজের ভালো মন্দ নিজে বিচার করতে পারি তবে তো সবাই  অন্তরের আলোতে আলোকিত মানুষ হতে  পারে। অন‍্যের ভালোমন্দ বিচার করা সহজ কাজ কিন্তু নিজের ভালো মন্দ বিচার করা অনেক কঠিন কাজ।   কারণ ভালো মন্দ বিচার করতে গেলে লোভ, হিংসা, নিন্দা, ঘৃণার মতো রিপুগুলো দমন করতে হয়। এগুলো দমন করার নামই সাধনা। আমাদের প্রতি কাজে কথায় যতটুকু দমন করতে পারি ততটুকুই অন্তর   পরিষ্কার হবে।  উদাহরণসরূপ বলা যায়,অনেক সময় আমরা অন‍্যজনের সম্পর্কে এভাবে মন্তব‍্য করে থাকি, "ও জীবনে কিছু করতে পারবে না।"যার সম্পর্কে আমরা মন্তব‍্য করি, তার কিন্তু ক্ষতি হবে না। ক্ষতি হবে তার, যে নেতিবাচক মন্তব‍্য করে। এ মন্তব‍্যের মাধ‍্যমে  মন্তব‍্যকারীর সবজান্তার পরিচয় পাওয়া যায়। অথচ মানুষ এক সেকেন্ড পরে কি হবে বলতে পারে না।  যারা আমরা নিজেদেরকে আল্লাহর  ভালো বান্দা মনে করি তারাই এ ধরণের কথা বলে থাকে। অথচ আমরা বুঝতে পারি না এটা কত খারাপ কথা। সবজান্তার মতো কথা বলা কিন্তু এক ধরণের শিরক। শিরক করা মহাপাপ। প্রতি কথায় কাজে মহাপাপ করে যাচ্ছি আর ইবাদত করে যাচ্ছি। পাপসহ ইবাদত কি কাজে আসবে? 

 এভাবে যদি আমরা নিজেদের প্রতিটি কথার ভালো মন্দ বুঝতে পারি তাহলে আমাদের অন্তর কিছুটা  পরিষ্কার হতে পারে।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ