প্রেসক্রিপশনে লেখা 'তারপর' এর মানে না বুঝার বিপদ

  শিক্ষিত রোগীরাই  প্রেসক্রিপশনে লেখা  'তারপর' এর মানে না বুঝে ভুলভাবে ঔষুধ খেয়ে নিজেদের চরম বিপদ ডেকে আনে।  ডাক্তারের অ‍্যাটেন্ডেন্স ডাক্তাররা বুঝিয়ে দিতে চাইলে অনেক সময়  রোগীরা ব‍্যস্ততার কারণে   নিজেরা বুঝতে পারবে বলে অ‍্যাটেন্ড‍্যান্স ডাক্তারের বুঝানোকে দরকার মনে করে না। 

তারপর আর কি।  সাধারণ প্রেসক্রিপশন মনে করে দোকান থেকে ঔষুধ কিনে খাওয়া শুরু করে।  অর্থাৎ  সকাল, দুপুর রাত্রে  কয়টা করে খেতে হবে, সে হিসাব করে খেতে থাকে। খাওয়ার পর যখন শরীর ভীষণ খারাপ লাগতে থাকে তখন রোগী ডাক্তারকে  দোষারোপ করতে থাকে। প্রথম দিন ঔষুধ খাওয়ার পর রোগীর চরম লাগা সত্ত্বেও  দ্বিতীয় দিন ঔষুধ খেতে না চাইলে রোগীর অভিভাবকরা এই বলে বুঝায়  "প্রথম প্রথম ঔষুধ এরকম খারাপ লাগবেই, এতো বড় ডাক্তার তো ভুল ঔষুধ দিবে না।" আর তৃতীয় দিন রোগীর  চরম খারাপ অবস্থা হয়ে যাবার কারণে রোগী ঔষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেয়।আর বলে, "ডাক্তারকে  ঔষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া  সম্পর্কে  না জানিয়ে আমি আর কোন ঔষুধ খাবো না। ঔষুধ খেলে আমি বাচঁবো না।'

 তারপর রোগী যখন  ডাক্তারকে জানালো, ঔষুধগুলো খেয়ে তার অবস্থা অনেক খারাপ হয়ে গেছে,তখন ডাক্তার রোগীকে বললো," প্রেসক্রিপশনে লেখা পাঁচ রকমের সব ঔষুধ এখন খেতে বলা হয়নি। প্রথম তিনটি ঔষুধ আপনি প্রথম সাতদিন খাবেন। এই ঔষুধ খাওয়া শেষ হলে পরের সাতদিন চতুর্থ ঔষুধটি খাবেন। তারপর চতুর্থ  ঔষুধ খাওয়া শেষ হলে পরের সাতদিন পঞ্চম ঔষুধটি খাবেন। প্রেসক্রিপশনে দেখেন, প্রথম তিনটি ঔষুধের পর " তারপর" কথাটি লেখা আছে। ডাক্তার বুঝানোর পর তারপর রোগী  "তারপরের ' মানে বুঝেন। 

ডাক্তারের সাথে কথা বলার পর তারপর রোগী ঘরের সবাইকে, আত্মীয় স্বজন, বন্ধুদেরকে ফোনে   বলতে থাকে,"  জটিলভাবে লেখা ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন আমি বুঝতে পারি নি। জীবনে প্রথম আমি এরকম  প্রেসক্রিপশন দেখেছি। প্রেসক্রিপশনে  ঔষুধ খাওয়ার নিয়ম বুঝতে না পেরে আমি মরতে যাচ্ছিলাম। উল্টাপাল্টা ঔষুধ খেয়ে ঔষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় কিছু মানুষের মরার ইতিহাস আছে। ভাগ‍্যিস আমি বেচেঁ গিয়েছি। সুতরাং সাবধান! ঔষুধ খাওয়ার সময় প্রেসক্রিপশন ভালো করে বুঝে নিতে হবে।"

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ