তরুণ তরণীদের মন খারাপও এক ধরণের মহামারী

   তরুণ তরুণীদের মন খারাপ এমন এক ধরণের  মহামারী,  যে মহামারীর কারণে  হাত পা  সকল অঙ্গ ঠিক থাকার পরও তারা  মানসিকভাবে পঙ্গু জীবনযাপন করছে। তারা নিজের মনের সমস‍্যা নিয়ে এতটাই ব‍্যস্ত যে, দুনিয়ার আর কোন সমস‍্যা তাদের চোখে পড়ে না।   নিজের  মনগড়া সমস‍্যা সমাধানের জন‍্য তারা  হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ঘরে বিভিন্ন ঝামেলা করতে থাকে। এ রকম ঝামেলা করতে করতে তারা এক সময়ে চরম মানসিক রোগীতে পরিনীত হয়ে যায়।

এই  মনগড়া মহামারী থেকে কেউ রক্ষা পায় আবার  কেউ রক্ষা পায় না। চারভাগের তিনভাগ রক্ষা  পায় আর একভাগ রক্ষা পায় না। যারা রক্ষা পায় তাদের প্রতি খোদার রহমত আছে বলতেই হবে। রহমত আছে বলেই অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের সমস‍্যার আসল কারণ  কোন না কোনভাবে জেনে সেই অনুযায়ী সমাধান করতে পারে। খোদার রহমতের একটি বহিঃপ্রকাশ তো আছে।  বহিঃপ্রকাশটা হচ্ছে সন্তানেরা তাদের মনের কথা অভিভাবকদের সাথে শেয়ার করে। আর যে সকল অভিভাবকেরা মনেপ্রাণে তাদের সন্তানদেরকে ভালোবাসে সেই সন্তানেরা তাদের মনের কথা অভিভাবকদের সাথে শেয়ার  করে। আর একভাগ যারা রক্ষা পায় নি তাদের  প্রতি খোদার রহমত আসলেই নেই।যদি রহমত থাকতো কোন না কোনভাবে অভিভাবকরা তাদের সন্তানের সমস‍্যার আসল কারণ জেনে সেই অনুযায়ী সমাধান করতে পারতো। অথচ এই অভিভাবকরা সন্তানের সাথে সাথে থেকেও  সন্তানের সমস‍্যার কারণ বুঝতে পারে নি। হয়তো সন্তান আর অভিভাবকের মাঝে ভালোবাসার অভাব রয়েছে।

এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে এই যে একভাগ অভিভাবকেরা যারা তাদের সন্তানের সমস‍্যা  বুঝতে পারলো না, এটা তাদের ব‍্যক্তিগত সমস‍্যা বলে কি   সচেতন জনগণের  চুপ করে থাকা  ঠিক হবে? এ ব‍্যাপারে  ব‍্যর্থ বাবা মাকে সহযোগীতা করার জন‍্য গণমাধ‍্যমের এগিয়ে আসা উচিত। 

 গণমাধ‍্যমে বিজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করা উচিত, "তরুণ তরুণীদের মন খারাপ কোন সাধারণ সমস‍্যা  নয়। এই সমস‍্যার সমাধানের  জন‍্য কোন কাউন্সেলরের সাহায‍্য নিলেই তা অতি সহজেই সমাধান হয়ে যাবে।"বিভিন্ন ধরণের বার্তা বিজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করা উচিত।যেমন অনেক অভিভাবকরা বুঝতে পারে না, কাউন্সেলিং কি  বা অনেক অভিভাবকেরা কাউন্সেলিং বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চায় না। তারা মনে করে নিজেরাই মন খারাপ সন্তানের সাথে কাউন্সেলিং করে সন্তানের মন ভালো করে দিতে  পারবে। বরং বাবা মায়ের কাউন্সেলিং তো কাজেই আসে না, উল্টো যত দিন যেতে থাকে তত মন খারাপ সন্তানের অবস্থা আরো খারাপের দিকে যেতে থাকে।

কাউন্সেলিং কি  তা বুঝিয়ে বিজ্ঞাপন আকারে  এভাবে প্রকাশ করা উচিত," কাউন্সেলর হচ্ছে মনের প্রাথমিক চিকিৎসার ডাক্তার। মনের যত অজানা  সমস‍্যা উদঘাটন করা এবং  সেই সমস‍্যার সমাধান দেওয়াই কাউন্সেলরের কাজ। এছাড়া আরো এভাবে প্রকাশ করা উচিত," মানসিক রোগের ভয়ংকর পরিণতি থেকে বাচাঁর জন‍্য কাউন্সেলরের সাহায‍্য নেয়া উচিত।

 তরুণ তরুণীদের মন খারাপকে মহামারী বলার কারণ হচ্ছে মন খারাপ তাদেরকে এমনভাবে গ্রাস করছে যে মন খারাপ থেকে তারা বের হতে পারে না। বের হতে না পেরে তারা  মানসিক অসুস্থতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। শুধুমাত্র অভিভাবকদের অজ্ঞতার  কারণে মন খারাপের সূচনা থেকে অনেক তরুণ তরণীদের ঠিকানা হয় মানসিক হাসপাতাল।  তরুণ তরুণীদের ঠিকানা যাতে মানসিক হাসপাতাল না হয় এজন‍্য গণমাধ‍্যমের এগিয়ে আসা উচিত।

তরুণ তরুণীদের মন খারাপজনিত সমস‍্যা কোন সাধারণ সমস‍্যা হতে পারে না বা এটা বয়ঃসন্ধিকালের সমস‍্যা বলেও উড়িয়ে দেয়া ঠিক নয়। কারণ বয়ঃসন্ধিকালের সমস‍্যা একটি মারাত্বক সমস‍্যা ।এই  সময় অনেক তরুণ তরুণীরা নানা ধরণের মনের জটিলতায় ভুগে।যখনই তরুণ তরুণীরা তাদের অভিভাবকদের সাথে মনের জটিলতা শেয়ার করতে চায় না তখনই তাদের মধ‍্যে মন খারাপজনিত  সমস‍্যা দেখা যায়। আর এই সমস‍্যার চিকিৎসা সময়মতো করা না হলেই এই মন খারাপ ভয়ংকর মানসিক সমস‍্যার দিকে এগিয়ে যায়।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ