একটু সহযোগীতার অভাবে প্রাণচঞ্চল তরুণ তরুণীরা মানসিক রোগীতে পরিণত হচ্ছে

 আমরা  শিক্ষিত, উচ্চশিক্ষিত অনেক মানসিক রোগীর  ইতিহাস জানি না।কারণ আত্মসম্মান রক্ষার জন‍্য অনেক মানসিক রোগীর পরিবার তা জানাতে চায় না। তবুও আশেপাশের  লোকের মাধ‍্যমে ও  মানসিক হাসপাতালে কিছুক্ষণ বসে থেকে যতটুকু জানা গিয়েছে তাই এখানে বলা  হচ্ছে।

 বেশ কয়েক বছর আগে  একজন মেয়ে ডাক্তার কিছুদিন ডাক্তারী পেশা চালিয়ে যাওয়ার পর হঠাৎ করে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে মানসিক রোগীতে পরিণীত হয়ে যায়।   আজও সে মানসিক রোগী। সে এখন পরিবারের বোঝা ছাড়া আর কিছু নয়।কারণ হিসাবে জানা যায় এক  ডাক্তার সহকর্মীর সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরে সেই সহকর্মী একদিন মেয়েটিকে না জানিয়ে বিয়ে করে বিদেশ চলে যায়। এরপর থেকেই তরুণ ডাক্তার মেয়েটি মানসিক অসুস্থতায় ভুগতে ভুগতে মধ‍্যবয়সে এসে পৌছেছে। অথচ মেয়েটির অসুস্থতার জন‍্য যে ঐ সহকর্মী দায়ী,মেয়েটির পরিবার তাকে ধরার চেষ্টা করে নি আত্মসম্মানের কারণে। কিন্তু এখন আর অসময়ে  ধরে এনে কোন লাভ নেই।সময়ের এক ফোটা তেল অনেক কাজে আসে কিন্তু অসময়ের হাজার ফোটা তেলও কোন কাজে আসবে না।

 এই ডাক্তার মেয়েটির  জীবন নষ্ট হবার জন‍্য কে দায়ী? অবশ‍্যই রাষ্ট্র,সমাজ দায়ী। সহকর্মী ব‍্যক্তি , পরিবারকে  দায়ী করছি না। কারণ ঘটনা ঘটার পর ঘটনার জন‍্য দায়ী ব‍্যক্তি ও পরিবারের কিছু করার থাকে না।তখন রাষ্ট্র ও সমাজের এগিয়ে আসা উচিত ঘটনার জন‍্য দায়ী ব‍্যক্তিটিকে খুজেঁ বের করার জন‍্য।

 আর এক মানসিক রোগীর মা আহাজারী করে  বলছে,"আমার ছেলে বিদেশ থাকতো। হঠাৎ তার বান্ধবীর বিয়ের খবর শুনে আমার ছেলে বিদেশেই অসুস্থ  হয়ে যায়। তারপর ওর বন্ধুরা ওকে দেশে পাঠিয়ে দেয়।মা আরো জানায়,মেয়েটি বিয়ে করে জামাই নিয়ে বিদেশ আছে।ওর একটি বাচ্চা ও আছে।" আমি   বললাম, "আপনি আপনার ছেলেকে ঐ মেয়ের সাথে কথা বলানোর ব‍্যবস্থা করে দেন, দেখবেন আপনার ছেলে সুস্থ হয়ে গেছে।" উত্তরে ছেলেটির মা বললো, সম্ভব নয়।ছেলেকে সুস্থ করতে বাবা মায়েরা যে সমস‍্যায় ভুগছে সেটি হচ্ছে আত্মসম্মানের বাঁধা। এই বাঁধা অতিক্রম করে দিতে পারে একমাত্র রাষ্ট্র ও সমাজ। রাষ্ট্র ও সমাজ যদি ছেলেটির সাথে মেয়েটির কথা বলানোর ব‍্যবস্থা করে দিতে পারে অবশ‍্যই ছেলেটি তার কর্মঠ জীবনে ফিরে যেতে পারবে। আর তা না হলে সারাজীবন ছেলেটি পরিবারের বোঝা হয়ে থাকবে। এখানে মেয়েটির সংসার ভাঙ্গার কথা অবশ‍্যই বলা হয় নি। তবে এখানে কথা বলার সময় বিশেষজ্ঞের পরামর্শমত কথা বলতে হবে।

 আমার প্রশ্ন, ডাক্তাররা কেন সহযোগীতার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয় না। গুরুত্ব দিলে কি ডাক্তারী পেশার কোন ক্ষতি হবে? ডাক্তার হয়তো এভাবে বলতে পারে, রোগের প্রথমদিকে সহযোগীতা করলে লাভ হতো। এখন সময় শেষ, সহযোগীতা কোন কাজে আসবে না।



মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ