জ্ঞান ছাড়া বাঁচা সম্ভব নয়

  জ্ঞান ছাড়া বাঁচা সম্ভব নয় - এটা কেমন কথা। জ্ঞান ছাড়া বাঁচা সম্ভব কিন্তু মানুষের মত বাঁচা সম্ভব নয়।  রোগে শোকে, সুখে দুঃখে দিন তো সবার    কেটেই যাচ্ছে।   কিন্তু বয়স বাড়ে, বয়সের ভারে এক সময় মানুষের জীবন অচল  হয়ে যায়। কেউ এ কথাটা মনে রাখে না, সারাজীবন  কেউ তরুণ থাকে না। যতদিন তারা তরুণ থাকে, অর্থ উপার্জন আর অর্থ সঞ্চয়ের ধান্ধায় তরুণ সময়টা পার করে দেয়। তরুণ সময়টাতে একটি জ্ঞানই লাভ করে। আর সেটা হচ্ছে, সারা জীবনের সঞ্চিত অর্থ  বৃদ্ধ সময়ে কিভাবে ব‍্যয় করবে।  যেমন চিন্তা তেমন কাজ।  তারপর আর কি, বৃদ্ধকালের রোগের পিছনে তার সঞ্চিত সকল অর্থ ব‍্যয় হয় বা অর্থ অনর্থের কারণ হয়। সাধারণের ভাষায়, অর্থ উপার্জনের সক্ষমতাকেই আমরা মানুষের মত বেঁচে থাকা বলি।

আর দুনিয়াখ‍্যাত তারকা দেখলে তো কথাই নেই, তাকে মহাজ্ঞানী ভাবতে শুরু করে  বিশেষ করে তরুণেরা।কারণ দুনিয়াটা তাদের কাছে নতুন। তাদের নতুন চোখে দুনিয়ার খ‍্যাতিবান মানুষের প্রতি তারা আকৃষ্ট হয় ও তাদেরকে অনুসরণ করতে থাকে অন্ধের মতো। এই তরুণেরা তখন বাবা মায়ের কথা ও শুনে না।এর জন‍্য  দায়ী বাবা মায়ের অজ্ঞতা বা মূর্খতা।যত উচ্চশিক্ষিত হউক কেন বাবা  মা, তারা তাদের সন্তানদেরকে সঠিক জ্ঞান দিতে পারছে না। কারণ কাগজের বিদ‍্যার উচ্চশিক্ষা  কাউকে  মানবিক জ্ঞান দিতে পারে না।

মানবিক জ্ঞান অর্জন করার জন‍্য প্রয়োজন মানবিক গুণ অর্জন করা। যেমন, সর্বোচ্চ মানবিক গুণ হচ্ছে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে মানুষকে ভলবাসা। এই সর্বোচ্চ মানবিক গুণটি আমাদের মাঝে নেই বলে আমরা  কাউকে  সঠিক শিক্ষা দিতে পারি না। উদাহরণসরূপ বলা যায়, যখন কোন বাবা মা তার অশান্ত সন্তানকে শান্ত করার জন‍্য যে কথা বলে, দেখা  গেল সে কথায় সন্তান আরো বেশি অশান্ত হয়ে গেল।এখানে বাবা মায়ের মূর্খতাই ধরা পড়ে।  উচ্চশিক্ষিত হয়েও কেন বাবা মায়ের সন্তান পরিচালনার জ্ঞান  নেই।

সত‍্যি   ভীষণ খারাপ লাগে যখনই  দেখি  তরুণকালের টগবগে মানুষটার বৃদ্ধকালের অসহায় অবস্থা। মানব জীবনের কি সার্থকতা, যদি বৃদ্ধকালে তারুণ‍্যময় মনটা নিয়ে মরতে না পারি।  বৃদ্ধকালের এই অসহায় অবস্থার জন‍্য দায়ী কে? দায়ী হচ্ছে তরুণকালে মনের শুদ্ধতার চর্চা না করে জৈবিক চাহিদার চর্চা করা। তরুণকালে শারীরিক ক্ষমতার দাপটে আমরা শারীরিক ক্ষমতার উৎস অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তাকে ভুলে যাই। আর   বৃদ্ধকালে শারীরিক ক্ষমতা  হারিয়ে  যখন উৎস খুঁজি তখন আর উৎস খুঁজে পাই না।

কারণ  উৎস পেতে হলে অনেক ত‍্যাগ তিতিক্ষা স্বীকার করতে হয়। বিন্দুমাত্র ত‍্যাগ তারা করে নি, কিভাবে বৃদ্ধকালে সৃষ্টিকর্তাকে খুঁজে পাওয়া যাবে?

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ