মানসিক রোগ ও শারীরিক রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি কি ভিন্ন হওয়া উচিৎ নয়?

  একজন মনোচিকিৎসক যখন একজন মানসিক রোগী দেখেন তখন  কিন্তু তিনি রোগীর  হার্টবিট, চোখ, পালস্ পরীক্ষা করেন না। মানসিক রোগ হওয়ার পিছনে কোন ঘটনা আছে কিনা সেটা তিনি জানতে চান। আর জানতে চান রোগীর বর্তমান আচরণ সম্পর্কে।এছাড়া  ডাক্তার যদি প্রয়োজন মনে করে তাহলে সিটি স্ক‍্যান ও অন‍্যান‍্য  পরীক্ষা করতে দেন।অর্থাৎ কোন রোগী যখন প্রথমবারের মত আসে তখন মনোচিকিৎসক রোগীর সম্পর্কে এসবই জানতে চান।

তারপর   প্রথমবার দেখানোর পর মানসিক রোগীটি যখন মাসে একবার বা দুইমাসে  একবার করে ডাক্তারের কাছে আসে তখন কিন্তু ডাক্তার রোগীর আচরণের উন্নতি, অবনতি সম্পর্কে জানতে  চান এবং সেই অনুযায়ী   নতুন ওষুধ দেয়ার দরকার মনে করলে দেন আর তা নাহলে আগের ওষুধ চালিয়ে যেতে বলেন।  

এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে যে সমস্ত পুরাতন মানসিক রোগীরা ছয় মাস/ এক বছর ধরে ডাক্তার দেখিয়ে আসছে কিন্তু হঠাৎ করে রোগী ডাক্তারের কাছে আসতে চাচ্ছে না। অথচ রোগী বাসায় ঝামেলা করছে। এ অবস্থায় কি ডাক্তারের সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেয়া উচিত নয়?   সহযোগীতার হাত বাড়ানো দূরে থাক। যতই বলা হয়  রোগী হাসপাতাল বা ডাক্তারের কাছে  আসতে চায় না  ততই   হাসপাতাল কর্মীরা বলতে থাকে, "ডাক্তার রোগী না দেখে  কোন পরামর্শ দিবেন না।"   এটা তো কোন মানসিক চিকিৎসার নীতি হতে পারে না।  মানসিক রোগের অনেক বৈশিষ্ট‍্য  আছে। রোগের একটি  বৈশিষ্ট‍্য হচ্ছে হঠাৎ করে রোগীর আচরণ উত্তপ্ত হয়ে যাওয়া।  ঘরের লোকজন যখন রোগীর উত্তপ্ত আচরণ শান্ত করতে পারে না তখনই ওরা ডাক্তারের সাহায‍্য চায়।  ডাক্তারের সাহায‍্য চাইলে ডাক্তারের কর্মীরা তখন বলে, "মেডিসিন ডাক্তার বা যে কোন ডাক্তার বলেন, কোন ডাক্তারই রোগী না দেখে ওষুধ দেন না।" এই ধরণের পরামর্শ কি কোন মানসিক হাসপাতাল কর্মীদের পরামর্শ হতে পারে?

 মানসিক রোগের চিকিৎসা হবে  একটু  ভিন্ন নিয়মে। এই চিকিৎসায় ডাক্তারের সাথে রোগীর থাকবে প্রত‍্যক্ষ যোগাযোগ  টেলিফোনে  । এই প্রত‍্যক্ষ যোগাযোগের জন‍্য অবশ‍্যই রোগীরা ফি  দিবে। রোগী   বা  রোগীর লোকজন যতবার যোগাযোগ করবে ততবারই ফি দিবে - ফি দেয়ার নিয়ম চালু করলে  কোন রোগী বা রোগীর লোকজন অবশ‍্যই অযথা ফোন করবে না ডাক্তারকে।   পুরাতন রোগীর জন‍্য এই নিয়ম চালু করলে  অনেক মানসিক রোগী উপকৃত হবে। ইচ্ছে করলেই ডাক্তার পুরাতন রোগীদেরকে অস্থিরতায় না রেখে তাদেরকে ফোনে ওষুধের পরামর্শ দিতে পারেন বা ফোনে রোগীর সাথে কথা বলে রোগীকে শান্ত করতে পারেন।  

নাছরীন আক্তার 

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ