কেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাঈম আত্মহত‍্যা করেছে

  আজকাল মানসিক হাসপাতালের চিত্র পর্যবেক্ষণ করলেই দেখা যায় এক সময়ের 2/3 জন  সুস্থ, মেধাবী ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ছাত্র ছাত্রী এমন ভয়ংকর মানসিক রোগে আক্রান্ত যে তারা এখন পরিবারের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।  কিন্তু 2/3 জন ছাত্রের জীবনের কি কোন দাম নেই।  এর  জন‍্য   মানসিক রোগ সম্পর্কে  জনগণকে সচেতন করার জন‍্য সরকারের ভূমিকা পালন করা উচিত।  

মেধাবী ছাত্র নাঈমের আত্মহত‍্যার পিছনে রয়েছে  কিন্তু দীর্ঘদিনের হতাশা  যা তার  পরিবারের সদস‍্যরা বুঝতে পারে নি এবং মানসিক রোগ সম্পর্কে অজ্ঞতা।



শারীরিক রোগের চেয়ে অনেক ভয়ংকর মানসিক রোগ।  একটি মানসিক রোগ একটি মানুষের জীবনকে   এমনভাবে পঙ্গু করে দেয় যে তারা বেঁচে থেকেও মৃত। এই মানসিক রোগ    সম্পর্কে  বেশীর ভাগ মানুষের কোনো ধারণা নেই।  এই রোগ সম্পর্কে তাদেরই ধারণা আছে যারা ভুক্তভোগী, আত্মীয়স্বজন বা প্রতিবেশী রোগীর প্রত‍্যক্ষদর্শী। 

এখন প্রশ্ন হচ্ছে কেন মানসিক রোগ  সম্পর্কে  সরকার সচেতন ভূমিকা পালন করবে?   কারণ  বাবা মা  বুঝতে পারে না তার সন্তান ভয়ংকর মানসিক রোগের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বাবা মা মনে করে সন্তান তো এরকম ঝামেলা করেই থাকে  সময় হলেই ঠিক হয়ে যাবে। 

 যে কোন  জটিল রোগ শুরুতে ধরা পড়লে যেমন  চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে যায়   তেমনি মানসিক রোগের চিকিৎসা শুরুতে করতে পারলে  মানসিক রোগ দূর হয়ে যায়।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে সরকার কিভাবে মানসিক রোগ সম্পর্কে   জনগণকে সচেতন করলে আর কোন তরুণ তরুণী মানসিক রোগে আক্রান্ত হবে না? যেমন সরকারীভাবে এ তথ‍্য প্রচার করা উচিত যে  যখনই কোন তর‍ুণ তরুণী  এলোমেলো কথা বলতে শুরু করবে তখনই সাথে সাথে তাকে কাউন্সেলিং ডাক্তার দেখাতে হবে দেরি না করে।  ডায়রিয়া হলে সুস্থ হওয়ার জন‍্য যেমন স‍্যালাইন খেতে হয়  তেমনি মানসিক সমস‍্যা দূর করার জন‍্য কাউন্সেলিং খুবই জরুরী।   আনেকেই কাউন্সেলিং   চিকিৎসাকে অবহেলা করে এই ভেবে যে রোগী নিজে নিজেই ঠিক হয়ে যাবে। যখন রোগী মারাত্মক মানসিক রোগীতে পরিণত হয়  তখন ঐ রোগীর পরিবারের সদস‍্যরা বলতে থাকে,' আমাদের তো এই রোগ সম্পর্কে ধারণা নেই।'

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের  ছাত্র  নাঈম তার স্বপ্নপূরণে ব‍্যর্থ হয়ে আত্মহত‍্যা করেছে। নিশ্চয়ই ছেলেটি দীর্ঘদিন হতাশায় ভুগে আত্মহত‍্যা করেছে। আর ছেলেটির সাথে থাকা  সদস‍্যরা ছেলেটির সমস‍্যাটিকে বুঝতে পারেন নি। যদি বুঝতো ছেলেটিকে তার বাবা মা জরুরীভাবে কাউন্সেলিং ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতো।  মানসিক রোগের ভয়াবহতা সম্পর্কে সরকার যদি জনগণকে সচেতন না করে  তাহলে  আত্মহত‍্যার মত ভয়ংকর মানসিক রোগের ঘটনা ঘটতেই থাকবে।

নাছরীন আক্তার

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ