প্রেম ও প্রযুক্তি নামের পাঠ্যপুস্তক থাকা জরুরী
প্রেম হচ্ছে উন্নত, মানবিক চরিত্রের গুণ।অথচ প্রেমের নামে তরুণ তরুণীরা অর্জন করছে অমানবিক গুণ। যেখানে মানবিকতা নেই, সেখানে প্রেম থাকতে পারে না। প্রেমকে কেন্দ্র করে কত তরুণ তরুণীর জীবন নষ্ট হচ্ছে তা জেনেও বিশেষজ্ঞরা প্রেম শিক্ষা বিষয়ক কোন উদ্যোগ গ্রহণ করছে না।
আমরা জানি কিশোর কিশোরী বা তরুণ তরুণীরা জৈবিক কারণে একজন আরেকজনের প্রেমে পড়ে। আবার প্রেমের আঘাতে অনেকের জীবন পুরোপুরি নষ্ট হতে দেখা যায়। এছাড়া প্রেমের বিয়েও আজকাল টিকছে না। বড়রা সবকিছু নীরব দর্শকের মতো দেখে যাচ্ছে কিন্তু তাদের কিছুই করার থাকে না। কারণ মোবাইল প্রেম কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করত হয় সেটা তারা জানে না।এর জন্য দায়ী কে? দায়ী হচ্ছে বিজ্ঞানের মোবাইল প্রযুক্তি।
আজকাল স্কুলের কিশোর কিশোরীদের মধ্যে প্রেমের জটিলতা দেখা যাচ্ছে স্কুল বয়সেই দূরের যাতায়াত ব্যবস্থার কারণে। কেউ বাসে যায়, কেউ ভ্যানে যায়। দেখা গেল যাতায়াতের সময় একজন আরেকজনের প্রেমে পড়ে। যে সময়ে তাদের ভুল প্রেমে পড়ার বয়স, সে সময় তাদেরকে অভিভাবক ছাড়া একা যাতায়াত করতে হয় যা আসলে ঠিক নয়। যাতায়াতের প্রেমজনিত সমস্যা দূর করার জন্য মেয়েদের আলাদা ভ্যান ও বাস থাকা উচিত।
মোবাইলের কারণে আজকাল প্রেমালাপ ও প্রেম যোগাযোগ এতই সহজ হয়ে গেছে যে তাদের কাছে প্রেমের অর্থ মানেই রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া ও অর্থহীন কথা বলে সময় অতিক্রম করা।আজকালের প্রেমে বিরহ নেই, ব্যর্থতা নেই, আছে প্রতিহিংসা, প্রতিশোধ।প্রেম মানেই ভক্তি, শ্রদ্ধা, ধৈর্য্য।নীরবতা, মান অভিমান এসব হচ্ছে প্রেমের সৌন্দর্য্য। মোবাইলে ইচ্ছামতো কথা বলা প্রেমের সৌন্দর্য্য নষ্ট করে দেয়। এর ফলে মনের প্রেম নষ্ট হয়ে যায়।আর সামান্য বিরহ ব্যর্থতাকে সহ্য করতে না পেরে আগ্রাসনমূলক কথাবার্তা বলতেই পছন্দ করে। মোবাইল প্রেম প্রেমের পবিত্রতা নষ্ট করছে।
প্রেমের আরও একটি খারাপ দিক হচ্ছে প্রেমের বিয়ে।এ বিয়ে গড়তে দুই দিন, ভাংতে একদিন। এ বিয়ের কথাবার্তায় অভিভাবকের ভূমিকা থাকে পুতুলের মত আর প্রেমের পাত্র পাত্রীর ভূমিকা থাকে পরিচালকের মত। পাত্র পাত্রীর কথামতোই বিয়ের কথাবার্তা ঠিক হয় এবং অভিভাবকদের সাবধান করে দেয়া হয় এই কথা বলে যেন তাঁরা বাড়তি কথা না বলে যদি বিয়ে ভেংগে যায়। অভিভাবকদের কাজ হচ্ছে বিয়ের আয়োজন করা।প্রেমের সময় তাদের মধ্যে শর্তযোগ্য কথাকেই তারা চূড়ান্ত বলে মেনে নেয়। অথচ প্রেম ও বিয়ে যে আকাশ পাতাল তফাৎ সেটা তারা বুঝতে পারে না। প্রেমের আবেগমাখা শর্তযোগ্য কথা যে একসময়ে বিয়ের পরে মিথ্যা হয়ে যেতে পারে সেটা তারা বুঝতে পারে না।
যাই হউক অল্প বয়সে প্রেমে পড়ার ভয়ংকর পরিণাম এবং প্রেম ও বিয়ের মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য বুঝিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে প্রেমের বিপদ থেকে রক্ষা করার জন্য স্কুলেই চালু করা উচিত প্রেম ও প্রযুক্তি বিষয়ক পাঠ্য বই।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন