পশুপ্রবৃত্তি দমনের জন্য আইন তৈরি দরকার
বাংলাদেশের সমাজে পরিবারের কর্তা হিসেবে বাবাকেই বিবেচনা করা হয়।কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাবারাই হয়ে থাকে একমাত্র আয় উপার্জনকারী ব্যক্তি। আর সেই বাবাই যদি হয়ে থাকে কৃপণ ব্যক্তি তাহলে সেই পরিবারের কি অবস্থা দাঁড়ায়।বাইরের মানুষের কাছে কৃপণ শব্দটি কিন্তু হাসির।কিন্তু সন্তানের কাছে কৃপণ বাবা শব্দটি খুবই দীর্ঘশ্বাসের।বাবাদের কৃপণতা নিয়ে ছোট সন্তানের প্রতিবাদের ভাষা না থাকলেও বড় সন্তানেরা প্রতিবাদ করে।
যখনই বড় সন্তানেরা প্রতিবাদ করে তখনই শুরু হয় অশান্তি। বাইরে থেকে সন্তান ও বাবার মধ্যে তর্ক বিতর্কের তুমুল পরিস্থিতি। মনে হয় যেন খুনাখুনি হয়ে যাচ্ছে। পরে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় সন্তান নতুন পোষাক কিনার জন্য বাবার কাছে টাকা চাইলে বাবা সেই টাকা দিতে অস্বীকার করলে শুরু হয় অশান্তি।সন্তানের অভিযোগ, 'বাবা যদি গরীব হতো কখনো নতুন পোষাক কিনার টাকা চাইতাম না। কষ্ট এখানেই, আমার বাবা কৃপণ। কৃপণতার জন্য অনেক জরুরী দায়িত্ব সে পালন করে না।' শিক্ষা, চিকিৎসার মতো গুরুতর দায়িত্ব ও এড়িয়ে যায়।
কৃপণ একটি অমানবিক চরিত্রের ত্রুটি। যেখানে কৃপণতা থাকে সেখানে ভালবাসা থাকতে পারে না। কৃপণতার জন্য পরিবারের কর্তা স্ত্রী সন্তানের অনেক প্রয়োজনীয় দায়িত্ব এড়িয়ে যায়। দায়িত্ব এড়ানোর ফলে সংসারে অশান্তি, কলহ লেগেই থাকে। এরকম অশান্তির পরিবেশে কিভাবে সন্তান সুনাগরিক হিসাবে বেড়ে উঠে।
পরিবারের দুষিত আচরণ দুর করার জন্য সরকারের পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। ভলো আয় উপার্জনকারী বাবারাই করে দায়িত্ব অবহেলার কৃপণতা। এ সমস্ত কৃপণ বাবাদের জন্যই সরকারের উচিত পারিবারিক কৃপণতা দূর করার আইন তৈরি করা।
যে সমস্ত বাবাদের অন্তরে সন্তানের প্রতি ভালবাসা থাকে তারাই সন্তানের প্রতি হয় অনেক যত্নশীল এবং সন্তানের সকল দায়িত্ব পালন করে। আর কৃপণ বাবাদেরকে বলে বলে ও সন্তানের প্রতি দায়িত্ব পালন করানো যায় না। কৃপণ বাবার অবহেলা পেতে পেতে যখন সন্তান অমানুষ হয়ে বড় হয় তখন সন্তানের চিৎকারের ভয়ে কৃপণ বাবা দায়িত্ব পালন শুরু করে। আর এই দায়িত্ব পালন তখন তেমন কাজে আসে না।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে কৃপণ বাবা কারা, যারা সংসারের শুরুতে সংসারের প্রতি থাকে উদাসীন? নিশ্চয়ই কৃপণ বাবা যৌতুক দাবীদার ব্যক্তি হবে, তা নাহলে সংসারের দায়িত্ব মেটাতে যতটুকু টাকা দরকার তার চেয়ে অর্ধেক টাকা স্ত্রীর হাতে তুলে দেয় কেন? বাকি টাকা স্ত্রী কি বাপের বাড়ি থেকে আনবে?
আইন কিসের জন্য? আইন হচ্ছে মানুষের পশুপ্রবৃত্তি দমনের জন্য। যেখানে পশুপ্রবৃত্তির আচরণ দেখা যাবে সেখানেই আইন তৈরি করতে হবে। তা নাহলে পরিবার, সমাজ, জাতি সুন্দর হবে না। মানুষের চরিত্র গঠনের ভিত্তি তো পরিবার। এই পরিবারের চরিত্র সুন্দর করার জন্য আইন দরকার।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন