2021 নয়, এবার ভাবুন 2022 সালের এস এস সি পরীক্ষার্থীদের নিয়ে

  মাননীয় প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনা কয়েক মাস আগে 2021 সালের এস এস সি  পরীক্ষার্থীদের  নিয়ে একটি কথা বলেছিলেন,  "এই  পরীক্ষার্থীরা  যে নবম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ  হয়েছে, তাদের এই দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ  ফলাফলের অবশ‍্যই অনেক দাম আছে। কারণ তারা পড়াশুনা করে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ  হয়েছে। " তখন প্রধানমন্ত্রীর এই কথার গুরুত্ব বুঝতে পারি নি। এখন বুঝতে পারছি শিক্ষা নিয়ে তাঁর এই মন্তব‍্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও সময়োপযোগী। করোনা মহামারীকালীন শিক্ষা সংকটে  তাঁর এই অর্থপূর্ণ কথা  বিশ্লষণ করার প্রয়োজন মনে করছি।

আমি মনে করি নবম থেকে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণের  ফলাফলকে 2021 সালের এস এস সি পরীক্ষার ফলাফল হিসাবে ঘোষণা করলে ভুল হবে না । কারণ  নবম শ্রেণিতেই বইয়ের সম্পূর্ণ সিলেবাসের চারভাগের তিনভাগের চেয়ে বেশি সিলেবাস পড়ানো হয়েছে। মাত্র সামান‍্য সিলেবাস বাকি ছিল। আর স্কুল পরীক্ষার প্রশ্ন সর্বদাই কঠিন হয় ও স‍্যাররা কড়াকড়িভাবে পরীক্ষার খাতা দেখেন এবং স‍্যাররা, শিক্ষার্থী যতটুকু নম্বর পাওয়ার কথা তার চেয়ে কমিয়ে দেন। স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ‍্যে এই কথা প্রচলিত আছে, যে শিক্ষার্থী  স্কুলের পরীক্ষায়  জি পি এ পয়েন্ট 4 পাবে বোর্ড পরীক্ষায় তারা জিপিএ 5 পাবে। এই কারণেই বলছি দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ পরীক্ষার ফলাফলকে যদি এস এস সি পরীক্ষার ফলাফল হিসাবে ঘোষণা করা হয় তবে জিপিএ পয়েন্ট এক করে বাড়িয়ে দিতে হবে।

আর আমার  মতে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের উপর পরীক্ষা নেওয়াটা  এস এস সি পরীক্ষার্থীদের আবার দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেওয়ার মতো মনে হয়। আমার মতে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের উপর পরীক্ষা দেওয়ার পরিবর্তে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ পরীক্ষার ফলাফলকে এস এসসি পরীক্ষার ফলাফল হিসাবে মেনে নিলেই উত্তম হবে। 

2021 সালের পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা দেওয়ার সময় পার হয়ে গেছে এবং তারা স্কুলে  এক বছর ভাল করে পড়াশুনা করে পরীক্ষা দিয়ে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। অথচ 2022 সালের এস এস সি পরীক্ষার্থীরা কি ন্তু সে সুযোগ পায় নি। এখন তাদের নিয়েই সবার ভাবা উচিত। তাদের একটি দিন সময়ও যাতে অযথা নষ্ট না হয় সেজন‍্য সরকারের  কার্যকরী পরিকল্পনা করা উচিত।আমার মতে, শিক্ষার্থীদের অ‍্যাসাইনমেন্ট প্রদানের কার্যক্রম তখনই কার্যকর  হবে  যখন সরকার অ‍্যাসাইনমেন্ট দিবে পরীক্ষার রুটিনের মত।অর্থাৎ পরীক্ষার মতই  প্রতিটি বিষয়ের 10 নম্বরের একটি  সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর  লিখার জন‍্য 20 মিনিটের বেশি  সময় দেওয়া উচিত নয়। এভাবে পরীক্ষার নিয়মে অ‍্যাসাইনমেন্ট দিলে শিক্ষার্থীরা পড়তে বাধ‍্য। এখন  যে অনির্দিষ্ট  সময়ের জন‍্য  অ‍্যাসাইনমেন্ট লিখতে বলা হয় সেই অ‍্যাসাইনমেন্টের জন‍্য শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করার প‍্রয়োজন মনে করে না।এই কারণেই বলছি শিক্ষা নিয়ে শিক্ষাবিদদের এমন  পরিকল্পনা করা উচিত যে পরিকল্পনায় শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করে। আর এই অ‍্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রম যদি পরীক্ষার মতো করে চালু করা হয় তবে এটার একটা ভালো দিক আছে। অ‍্যাসাইনমেন্ট যদি হয় পরীক্ষা তবে এই পরীক্ষায় কারো নকল করার কোন সুযোগ থাকবে না। 

নাছরীন আক্তার

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ