ক্লাস ওয়ানে ভর্তির  যোগ‍্যতা

আজকালের  বাংলাদেশের  ছেলেমেয়েরা 7-8 বছরে ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হয়। কিন্তু ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে লেখা  থাকে ভর্তির বয়স হতে হবে  ছয় বছর।বয়সের হিসাবটা খাতা  কলম পর্যন্তই থাকে। যাইহোক   ক্লাস ওয়ানের জটিল ভর্তি  পরীক্ষার প্রতিযোগিতা   থেকে ছেলেমেয়েরা বেচেঁছে।ছেলেমেয়েরা বাচঁলেও  অনেক অভিভাবকেরা   কিন্তু  এ ভাবনা থেকে  বাচেঁ নি যে ক্লাস ওয়ানে  ভর্তির জন‍্য যোগ‍্যতা কেমন হবে।

অনেক অভিভাবকেরা  বিশেষ করে নতুন অভিভাবকেরা  যারা প্রথম সন্তানের মা- বাবা তারা মনে করে নিজের নাম, বাবা- মায়ের নাম, কয়েকটি  ফল- ফুলের  নাম লিখতে  পারলেই সে ক্লাস ওয়ানে   ভর্তির  যোগ‍্য হবে।কারণ অনেক অভিভাবকেরা  শুনতে পায় যে  লটারীর মাধ‍্যমে ভর্তি প্রর্তিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন‍্য পরীক্ষার্থীকে  নিজের নাম, বাবা- মায়ের নাম লিখতে জানতে হয়। অনেক অভিভাবক  তখন  এরকম কয়েকটি   নাম লিখতে পারলেই  তার সন্তানকে  ভর্তি প্রতিযোগিতায়  অংশগ্রহণ করায়   ও লটারীতে নাম উঠলেই   খুশিতে সন্তানকে ক্লাস ওয়ানে  ভর্তি করিয়ে দেয়। এটি আর ভেবে দেখে না  যে আমার বাচ্চা যদি ক্লাস ওয়ানের পড়া না পারে  তারপর তাকে  সারা বছর ঠেলাগাড়ির মত ঠেলতে হবে। সচেতন অভিভাবকেরা  জানে, ক্লাস ওয়ানে ভর্তি করাতে হলে প্রথমে তার  তার বাচ্চাটিকে যোগ‍্য করে তুলে তারপর তাকে ভর্তি করতে হবে।


ক্লাস ওয়ানে  ভর্তির একটি মাপকাঠি  আছে। সেই মাপকাঠি হচ্ছে-  যেসব বাচ্চারা ইংরেজি  ও বাংলা  রিডিং অনর্গল   পড়তে পারবে  তারাই ক্লাস ওয়ানে পড়ার যোগ‍্য হবে।অসচেতন অভিভাবকদের  সচেতন  করার জন‍্য  এ মাপকাঠিটা গণমাধ‍্যমে প্রচার করা উচিত।অনেক উচ্চশিক্ষিত অভিভাবকেরা ও  অসচেতন  অভিভাবকদের  মত   বাচ্চাকে ক্লাস ওয়ানে ভর্তির বেলায় ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।শুধুমাত্র নিজের নাম, বাবা- মায়ের নাম  লিখতে পারার  ভিত্তিতে  তার বাচ্চাকে ভর্তি করিয়ে  দেন এই  আশায় যে ও পড়তে পড়তে  পড়াশোনায় ভালো করবে। 

 পড়তে বসলেই  ঝামেলা, কান্নাকাটি চলে তার বাচ্চার। ঝামেলা করে পড়তে পড়তে শেষ পর্যন্ত এ বাচ্চার  পড়ার প্রতি অনীহা  ও অমনোযোগ  দেখা যায়।

ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণের  শিকার তপু নামের একজন শিক্ষাথাীর  কথা বলা যায়। তপুর বাবা- মা লটারী সিস্টেমে ক্লাস ওয়ানে  ভর্তি করিয়ে দেয়।ভর্তির পর  তপু ক্লাসের পড়া কিছুই বুঝতে পারে না।অন‍্য বাচ্চাদের এক পৃষ্ঠা  পড়া হয়ে গেলে তপু  একটি  লাইন নিয়ে বসে থাকে।তপুর দোষ নেই।  কারণ তপু   ক্লাস ওয়ানে পড়ার যোগ‍্য হয় নি। তারপর আর কি? প্রতিদিন স্কুল থেকে বাসায় ফিরে   পড়তে বসলেই  শুরু হয় তপুর কান্নাকাটি। তখন বাবা-মা তাদের নিজেদের  ভুল বুঝতে পারে।

 তারপর বাবা-মা তাদের সন্তান তপুকে ক্লাস ওয়ানে  ভর্তিকৃত স্কুল থেকে নিয়ে এসে  আগে যে স্কুলে নার্সারী শ্রেণিতে পড়তো  সেই নার্সারী শ্রেণিতে ভর্তি করিয়ে দেয়।তপু যেন দোযখ থেকে স্বর্গে ফিরে এল। তপুর মত কত ছাত্রছাত্রী ভুল সিদ্ধান্তের কারণে দূর্বিসহ জীবনযাপন করছে কে জানে? 

যাইহোক দূর্বিসহ না করে  সময়  থাকতে তপুর বাবা- মায়ের মত সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে আপনার সন্তানের জীবনকে স্বর্গময় করে তুলুন। আপনার সন্তান  ক্লাস ওয়ানে পড়ার যোগ‍্য কিনা সেটা প্রথমে আপনি যাচাই করুন।

নাছরীন আক্তার




মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ